শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:১৭ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলা: আদালতের কাঠগড়ায় স্বাক্ষীকে হত্যার হুমকি

বিশেষ প্রতিবেদক:

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা নেতা মুহিব্বুল্লাহ হত্যা মামলায় স্বাক্ষী চলাকালীন সময়ে আদালতের কাঠগড়ায় দাড়িয়ে স্বাক্ষীকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন আসামী। এসময় আদালতের বিচারক হুমকিদাতা আসামিকে সতর্ক করেছেন।

আজ মঙ্গলবার (১নভেম্বর) দুপুরে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণের সময় স্বাক্ষী নুরে আলমকে হত্যার হুমকি দেন খায়রুল আমিন নামের এক আসামী। তা বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আমলে নিয়ে তাকে সতর্ক করেন আদালত।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম।

তিনি জানান, আদালতে দুই জনের সাক্ষ্য শেষ হয়েছে। সাক্ষী নুরে আলম যখন সাক্ষী দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তখন এক আসামী তাকে গলাকেটে হত্যা করার হুমকি দেন। আইনি জটিলতার কারণে আসামীর নাম প্রকাশ করতে পারছি না। তবে বিজ্ঞ বিচারক বিষয়টি আমলে নিয়ে আসামী ও তার আইনজীবিকে সতর্ক করেছেন।

আসামী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট আবদুল মান্নান জানান, উক্ত মামলার স্বাক্ষী চলাকালীন সময়ে নূরে আলম নামের একজন স্বাক্ষী বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আসামীর বিরুদ্ধে হত্যার হুমকির অভিযোগ করেন। এসময় বিচারক আসামী খায়রুল আলমের নিকট জানতে চাইলে আসামি হত্যার হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করেন।

এদিকে, রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলায় গত দুদিনে এই মামলায় তিন জন স্বাক্ষী আদালতে স্বাক্ষ্য দিলেন। গত সোমবার এই মামলার বাদী ও এক নাম্বার স্বাক্ষী নিহত মুহিব্বুল্লাহর ছোট ভাই হাবিবউল্লাহ স্বাক্ষ্য দিয়েছিলেন।

আলোচিত রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলায় কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে মামলার ১৪ আসামিকে আদালতে আনা হয়। তাদের উপস্থিতিতে নেয়া হয় মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ।

সোমবার স্বাক্ষদানকালে মামলার বাদি হাবিবউল্লাহ আদালতে জানিয়েছেন, মিয়ানমার থেকে বাস্ত্যুচুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের জন্য জোরালোভাবে ভূমিকা পালন করায় সন্ত্রাসীদের এক গ্রুপ পরিকল্পিতভাবে তাঁর ভাইকে হত্যা করেছে। রোহিঙ্গারা যাতে দ্রুত তাদের দেশে ফিরে যেতে পারে এ জন্য তিনি ক্যাম্পে ক্যাম্পে আন্দোলন শুরু করেন। রোহিঙ্গাদের দ্রুত স্বদেশে ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছেও নানা দাবি তুলেছিলেন তিনি।

আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস এ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়ার কুতুপালংয়ের লম্বাশিয়া ১-ইস্ট নম্বর ক্যাম্পের ডি ব্লকে নিজ সংগঠনের কার্যালয়ে মুখোশধারী বন্দুকদারিদের গুলিতে নিহত হন। হত্যাকান্ডের পরদিন মুহিবুল্লাহর ছোট ভাই হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে উখিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ সাড়ে আট মাস তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা উখিয়া থানার সাবেক পরিদর্শক (তদন্ত) গাজী সালাহ উদ্দীন ২৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। এতে সাত জনের নাম ঠিকানা সঠিক পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদানের জন্য আবেদন জানান তদন্তকারি কর্মকর্তা। অভিযোগপত্রে ৩৮ জনের নাম ও ঠিকানা সাক্ষীর তালিকায় রয়েছে। আদালত শুনানী শেষে ১১ সেপ্টেম্বর ২৯ জন আসামীর বিরুদ্ধে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করেন। ওইদিন আদালত সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১১ অক্টোবর মামলার পরবর্তী দিন ধার্য ছিল।

বর্তমানে মুহিবুল্লাহ’র পরিবারের ২৫ জন সদস্য কানাডায় বসবাস করছেন। প্রথম দফায় ৩১ মার্চ স্ত্রীসহ ১১ জন এবং দ্বিতীয় দফায় ২৫ সেপ্টেম্বর ১৪ জন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে কানাডা পাড়ি জমান জাতিসংঘের শরনার্থী বিষয়ক সংস্থার সহায়তায়।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION